টেস্ট রিলিফ (টিআর) ও কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচি (কাবিখা) জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তবে এসব কর্মসূচি নিয়ে নানা প্রশ্ন আছে। গত ১৪ জুন ‘কাবিখা লুটেখা’ শিরোনামে একটি খবর মুদ্রিত হয়েছে বাংলাদেশ প্রতিদিনে। রিপোর্টে বলা হয়, টিআর ও কাবিখার নামে বরাদ্দকৃত অর্থের ৬০ থেকে ৭০ শতাংশেরই কোন কাজ হয় না। অনেক সময় শতভাগই গায়েব করে দেয়া হয়। টিআর এবং কাবিখার বরাদ্দে উন্নয়নের নামে উপজেলায় গড়ে উঠেছে ‘লুটে খা’ সিন্ডিকেট। নানা কৌশলে প্রশাসনের যোগসাজশেই এই লুটপাট এবং দুর্নীতি এখন ওপেন সিক্রেট বিষয়। অনেক সময় দেখা যায়, এমপিরা নিজেরাই এর সঙ্গে সরাসরি জড়িয়ে পড়েন। আবার কোনো কোনো এলাকায় এমপি না জড়ালেও স্থানীয় পর্যায়ে সরকারি দলের নেতা-কর্মী ও সরকারি দল সমর্থিত জনপ্রতিনিধিরা ভাগাভাগি করে নেন পুরো প্রকল্পের টাকা। অভিযোগ আছে, রাজনৈতিক দলের মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের তুষ্ট রাখতে প্রতিবছরই এই টিআর ও কাবিখা বরাদ্দ দেয়া হয়। অথচ এসব বরাদ্দের বিপরীতে আদৌ কোনো কাজ হলো কিনা তার কোন রকম তদারকি হয় না। সুশাসনের অভাবে টিআর ও কাবিখা কর্মসূচি এখন দুর্নীতির বড় প্রশ্রয় ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের শেষ দিকে ৩০০ এমপি ও সংরক্ষিত আসনের ৫০ জন এমপির নামে টিআর ও কাবিখার বিপরীতে বরাদ্দ দিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়। প্রতিজন এমপির বিপরীতে টিআর প্রকল্পের জন্য ৩০০ মেট্রিক টন ও কাবিখা প্রকল্পের জন্য ৩০০ মেট্রিক টন করে গম ও চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। টিআর ও কাবিখা মিলিয়ে মোট বরাদ্দের পরিমাণ জনপ্রতি ৬০০ মেট্রিক টন। জানা গেছে, এই বরাদ্দ প্রকল্পের বিপরীতে দেয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে প্রকল্প না পেয়েই। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সরকার ভর্তুকি মূল্যে যে চাল ও গম ক্রয় করে, সেই চাল-গমই আরো কম মূল্যে টিআর ও কাবিখার জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু কেনার মূল্য থেকে কর্মে বরাদ্দ দেয়া হলেও বাস্তবে সিন্ডিকেট চক্রের কারণে সেই চাল ও গম বিক্রি হয় সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়েও অনেক কম দামে। সূত্র জানায়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় চলতি বছর টিআর ও কাবিখার বিপরীতে বরাদ্দ দেয়া প্রতি টন চালের মূল্য ধরে দিয়েছিল ২২ হাজার ৫০০ টাকা করে। একইভাবে প্রতিটন গমের মূল্য সরকার নির্ধারণ করে দিয়েছিল ১৯ হাজার ৫০০ টাকা করে। কিন্তু টিআর ও কাবিখা প্রকল্পে বরাদ্দ দেয়া প্রতি টন চাল সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়েছে ১৪ হাজার টাকা ও গম বিক্রি করা হয়েছে ১১ থেকে ১২ হাজার টাকা দরে। অথচ বর্তমানে চালের বাজার দর হচ্ছে প্রতি টন প্রায় ২৫ হাজার টাকা করে। আর গমের বর্তমান বাজার দর হচ্ছে প্রতি টন প্রায় ২০ হাজার টাকা। মাঠ পর্যায় থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, বরাদ্দকৃত চাল ও গম উপজেলা পর্যায়ে স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি এবং সরকারি দলের নেতা-কর্মীর সমন্বয়ে গড়ে ওঠা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সুলভমূল্যে বিক্রি করে দেয়া হচ্ছে।
টিআর ও কাবিখার এসব দুর্নীতি প্রসঙ্গে টিআইবি’র ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, জনপ্রতিনিধিদের হাতে এ বরাদ্দ দেয়ায় অর্থের অপচয় থেকে শুরু করে দুর্নীতির সুযোগও সৃষ্টি হয়েছে। এমন সিদ্ধান্ত থেকে সরকারের সরে আসা উচিত। আমি নীতিগতভাবে এই প্রক্রিয়াকে সমর্থন করি না। জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্ব এটি হওয়ার কথা নয়। স্থানীয় সরকারের হাতে, প্রকল্প বাস্তবায়নে অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের হাতে এ দায়িত্ব দেয়া উচিত। এমপিদের হাতে বরাদ্দ দিলে দলীয়করণের সৃষ্টি হয়। এদিকে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, এসব বরাদ্দ এমপিদের হাতে দেয়াই অন্যায়। এটি সংসদ সদস্যদের কাজ নয়। তাদের কাজ হলো সংসদে আইন প্রণয়ন করা, সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা। এছাড়া অর্থবছরের শেষ সময়ে এসে বরাদ্দ দিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে তার বাস্তবায়ন দেখাতে গেলে লুটপাট তো হবেই। কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার চেয়ারম্যান শাহজাহান মজুমদার বলেন, টিআর, কাবিখার টাকা কোনো কাজেই আসে না। এসব বরাদ্দ এমপি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ইউপি চেয়ারম্যানদের হরিলুট ও ভাগবাটোয়ারার মধ্যে শেষ হয়। আমরা মনে করি যে জনগণের জন্য বরাদ্দ তারাই যদি না পায় তাহলে এসব প্রকল্পে অর্থ খরচ করে লাভ কি? দুর্নীতির মাত্রা বৃদ্ধি তো কোনো প্রকল্পের লক্ষ্য হতে পারে না। টিআর ও কাবিখা তখনই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে যখন তার সুফল জনগণ পাবে। এই ক্ষেত্রে সরকারের করণীয় আছে। সরকার কর্তব্য কর্মে এগিয়ে আসে কিনা সেটাই এখন দেখার বিষয়।
টেস্ট রিলিফ (টিআর) ও কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচি (কাবিখা) জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তবে এসব কর্মসূচি নিয়ে নানা প্রশ্ন আছে। গত ১৪ জুন ‘কাবিখা লুটেখা’ শিরোনামে একটি খবর মুদ্রিত হয়েছে বাংলাদেশ প্রতিদিনে। রিপোর্টে বলা হয়, টিআর ও কাবিখার নামে বরাদ্দকৃত অর্থের ৬০ থেকে ৭০ শতাংশেরই কোন কাজ হয় না। অনেক সময় শতভাগই গায়েব করে দেয়া হয়। টিআর এবং কাবিখার বরাদ্দে উন্নয়নের নামে উপজেলায় গড়ে উঠেছে ‘লুটে খা’ সিন্ডিকেট। নানা কৌশলে প্রশাসনের যোগসাজশেই এই লুটপাট এবং দুর্নীতি এখন ওপেন সিক্রেট বিষয়। অনেক সময় দেখা যায়, এমপিরা নিজেরাই এর সঙ্গে সরাসরি জড়িয়ে পড়েন। আবার কোনো কোনো এলাকায় এমপি না জড়ালেও স্থানীয় পর্যায়ে সরকারি দলের নেতা-কর্মী ও সরকারি দল সমর্থিত জনপ্রতিনিধিরা ভাগাভাগি করে নেন পুরো প্রকল্পের টাকা। অভিযোগ আছে, রাজনৈতিক দলের মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের তুষ্ট রাখতে প্রতিবছরই এই টিআর ও কাবিখা বরাদ্দ দেয়া হয়। অথচ এসব বরাদ্দের বিপরীতে আদৌ কোনো কাজ হলো কিনা তার কোন রকম তদারকি হয় না। সুশাসনের অভাবে টিআর ও কাবিখা কর্মসূচি এখন দুর্নীতির বড় প্রশ্রয় ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের শেষ দিকে ৩০০ এমপি ও সংরক্ষিত আসনের ৫০ জন এমপির নামে টিআর ও কাবিখার বিপরীতে বরাদ্দ দিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়। প্রতিজন এমপির বিপরীতে টিআর প্রকল্পের জন্য ৩০০ মেট্রিক টন ও কাবিখা প্রকল্পের জন্য ৩০০ মেট্রিক টন করে গম ও চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। টিআর ও কাবিখা মিলিয়ে মোট বরাদ্দের পরিমাণ জনপ্রতি ৬০০ মেট্রিক টন। জানা গেছে, এই বরাদ্দ প্রকল্পের বিপরীতে দেয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে প্রকল্প না পেয়েই। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সরকার ভর্তুকি মূল্যে যে চাল ও গম ক্রয় করে, সেই চাল-গমই আরো কম মূল্যে টিআর ও কাবিখার জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু কেনার মূল্য থেকে কর্মে বরাদ্দ দেয়া হলেও বাস্তবে সিন্ডিকেট চক্রের কারণে সেই চাল ও গম বিক্রি হয় সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়েও অনেক কম দামে। সূত্র জানায়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় চলতি বছর টিআর ও কাবিখার বিপরীতে বরাদ্দ দেয়া প্রতি টন চালের মূল্য ধরে দিয়েছিল ২২ হাজার ৫০০ টাকা করে। একইভাবে প্রতিটন গমের মূল্য সরকার নির্ধারণ করে দিয়েছিল ১৯ হাজার ৫০০ টাকা করে। কিন্তু টিআর ও কাবিখা প্রকল্পে বরাদ্দ দেয়া প্রতি টন চাল সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়েছে ১৪ হাজার টাকা ও গম বিক্রি করা হয়েছে ১১ থেকে ১২ হাজার টাকা দরে। অথচ বর্তমানে চালের বাজার দর হচ্ছে প্রতি টন প্রায় ২৫ হাজার টাকা করে। আর গমের বর্তমান বাজার দর হচ্ছে প্রতি টন প্রায় ২০ হাজার টাকা। মাঠ পর্যায় থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, বরাদ্দকৃত চাল ও গম উপজেলা পর্যায়ে স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি এবং সরকারি দলের নেতা-কর্মীর সমন্বয়ে গড়ে ওঠা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সুলভমূল্যে বিক্রি করে দেয়া হচ্ছে।
টিআর ও কাবিখার এসব দুর্নীতি প্রসঙ্গে টিআইবি’র ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, জনপ্রতিনিধিদের হাতে এ বরাদ্দ দেয়ায় অর্থের অপচয় থেকে শুরু করে দুর্নীতির সুযোগও সৃষ্টি হয়েছে। এমন সিদ্ধান্ত থেকে সরকারের সরে আসা উচিত। আমি নীতিগতভাবে এই প্রক্রিয়াকে সমর্থন করি না। জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্ব এটি হওয়ার কথা নয়। স্থানীয় সরকারের হাতে, প্রকল্প বাস্তবায়নে অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের হাতে এ দায়িত্ব দেয়া উচিত। এমপিদের হাতে বরাদ্দ দিলে দলীয়করণের সৃষ্টি হয়। এদিকে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, এসব বরাদ্দ এমপিদের হাতে দেয়াই অন্যায়। এটি সংসদ সদস্যদের কাজ নয়। তাদের কাজ হলো সংসদে আইন প্রণয়ন করা, সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা। এছাড়া অর্থবছরের শেষ সময়ে এসে বরাদ্দ দিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে তার বাস্তবায়ন দেখাতে গেলে লুটপাট তো হবেই। কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার চেয়ারম্যান শাহজাহান মজুমদার বলেন, টিআর, কাবিখার টাকা কোনো কাজেই আসে না। এসব বরাদ্দ এমপি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ইউপি চেয়ারম্যানদের হরিলুট ও ভাগবাটোয়ারার মধ্যে শেষ হয়। আমরা মনে করি যে জনগণের জন্য বরাদ্দ তারাই যদি না পায় তাহলে এসব প্রকল্পে অর্থ খরচ করে লাভ কি? দুর্নীতির মাত্রা বৃদ্ধি তো কোনো প্রকল্পের লক্ষ্য হতে পারে না। টিআর ও কাবিখা তখনই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে যখন তার সুফল জনগণ পাবে। এই ক্ষেত্রে সরকারের করণীয় আছে। সরকার কর্তব্য কর্মে এগিয়ে আসে কিনা সেটাই এখন দেখার বিষয়।
টেস্ট রিলিফ (টিআর) ও কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচি (কাবিখা) জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তবে এসব কর্মসূচি নিয়ে নানা প্রশ্ন আছে। গত ১৪ জুন ‘কাবিখা লুটেখা’ শিরোনামে একটি খবর মুদ্রিত হয়েছে বাংলাদেশ প্রতিদিনে। রিপোর্টে বলা হয়, টিআর ও কাবিখার নামে বরাদ্দকৃত অর্থের ৬০ থেকে ৭০ শতাংশেরই কোন কাজ হয় না। অনেক সময় শতভাগই গায়েব করে দেয়া হয়। টিআর এবং কাবিখার বরাদ্দে উন্নয়নের নামে উপজেলায় গড়ে উঠেছে ‘লুটে খা’ সিন্ডিকেট। নানা কৌশলে প্রশাসনের যোগসাজশেই এই লুটপাট এবং দুর্নীতি এখন ওপেন সিক্রেট বিষয়। অনেক সময় দেখা যায়, এমপিরা নিজেরাই এর সঙ্গে সরাসরি জড়িয়ে পড়েন। আবার কোনো কোনো এলাকায় এমপি না জড়ালেও স্থানীয় পর্যায়ে সরকারি দলের নেতা-কর্মী ও সরকারি দল সমর্থিত জনপ্রতিনিধিরা ভাগাভাগি করে নেন পুরো প্রকল্পের টাকা। অভিযোগ আছে, রাজনৈতিক দলের মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের তুষ্ট রাখতে প্রতিবছরই এই টিআর ও কাবিখা বরাদ্দ দেয়া হয়। অথচ এসব বরাদ্দের বিপরীতে আদৌ কোনো কাজ হলো কিনা তার কোন রকম তদারকি হয় না। সুশাসনের অভাবে টিআর ও কাবিখা কর্মসূচি এখন দুর্নীতির বড় প্রশ্রয় ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের শেষ দিকে ৩০০ এমপি ও সংরক্ষিত আসনের ৫০ জন এমপির নামে টিআর ও কাবিখার বিপরীতে বরাদ্দ দিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়। প্রতিজন এমপির বিপরীতে টিআর প্রকল্পের জন্য ৩০০ মেট্রিক টন ও কাবিখা প্রকল্পের জন্য ৩০০ মেট্রিক টন করে গম ও চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। টিআর ও কাবিখা মিলিয়ে মোট বরাদ্দের পরিমাণ জনপ্রতি ৬০০ মেট্রিক টন। জানা গেছে, এই বরাদ্দ প্রকল্পের বিপরীতে দেয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে প্রকল্প না পেয়েই। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সরকার ভর্তুকি মূল্যে যে চাল ও গম ক্রয় করে, সেই চাল-গমই আরো কম মূল্যে টিআর ও কাবিখার জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু কেনার মূল্য থেকে কর্মে বরাদ্দ দেয়া হলেও বাস্তবে সিন্ডিকেট চক্রের কারণে সেই চাল ও গম বিক্রি হয় সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়েও অনেক কম দামে। সূত্র জানায়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় চলতি বছর টিআর ও কাবিখার বিপরীতে বরাদ্দ দেয়া প্রতি টন চালের মূল্য ধরে দিয়েছিল ২২ হাজার ৫০০ টাকা করে। একইভাবে প্রতিটন গমের মূল্য সরকার নির্ধারণ করে দিয়েছিল ১৯ হাজার ৫০০ টাকা করে। কিন্তু টিআর ও কাবিখা প্রকল্পে বরাদ্দ দেয়া প্রতি টন চাল সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়েছে ১৪ হাজার টাকা ও গম বিক্রি করা হয়েছে ১১ থেকে ১২ হাজার টাকা দরে। অথচ বর্তমানে চালের বাজার দর হচ্ছে প্রতি টন প্রায় ২৫ হাজার টাকা করে। আর গমের বর্তমান বাজার দর হচ্ছে প্রতি টন প্রায় ২০ হাজার টাকা। মাঠ পর্যায় থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, বরাদ্দকৃত চাল ও গম উপজেলা পর্যায়ে স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি এবং সরকারি দলের নেতা-কর্মীর সমন্বয়ে গড়ে ওঠা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সুলভমূল্যে বিক্রি করে দেয়া হচ্ছে।
টিআর ও কাবিখার এসব দুর্নীতি প্রসঙ্গে টিআইবি’র ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, জনপ্রতিনিধিদের হাতে এ বরাদ্দ দেয়ায় অর্থের অপচয় থেকে শুরু করে দুর্নীতির সুযোগও সৃষ্টি হয়েছে। এমন সিদ্ধান্ত থেকে সরকারের সরে আসা উচিত। আমি নীতিগতভাবে এই প্রক্রিয়াকে সমর্থন করি না। জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্ব এটি হওয়ার কথা নয়। স্থানীয় সরকারের হাতে, প্রকল্প বাস্তবায়নে অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের হাতে এ দায়িত্ব দেয়া উচিত। এমপিদের হাতে বরাদ্দ দিলে দলীয়করণের সৃষ্টি হয়। এদিকে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, এসব বরাদ্দ এমপিদের হাতে দেয়াই অন্যায়। এটি সংসদ সদস্যদের কাজ নয়। তাদের কাজ হলো সংসদে আইন প্রণয়ন করা, সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা। এছাড়া অর্থবছরের শেষ সময়ে এসে বরাদ্দ দিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে তার বাস্তবায়ন দেখাতে গেলে লুটপাট তো হবেই। কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার চেয়ারম্যান শাহজাহান মজুমদার বলেন, টিআর, কাবিখার টাকা কোনো কাজেই আসে না। এসব বরাদ্দ এমপি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ইউপি চেয়ারম্যানদের হরিলুট ও ভাগবাটোয়ারার মধ্যে শেষ হয়। আমরা মনে করি যে জনগণের জন্য বরাদ্দ তারাই যদি না পায় তাহলে এসব প্রকল্পে অর্থ খরচ করে লাভ কি? দুর্নীতির মাত্রা বৃদ্ধি তো কোনো প্রকল্পের লক্ষ্য হতে পারে না। টিআর ও কাবিখা তখনই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে যখন তার সুফল জনগণ পাবে। এই ক্ষেত্রে সরকারের করণীয় আছে। সরকার কর্তব্য কর্মে এগিয়ে আসে কিনা সেটাই এখন দেখার বিষয়।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস